বাংলাদেশে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই সময়টিকেই বলা হয় বিয়ের মৌসুম। আবহাওয়া শীতল ও স্বস্তিদায়ক থাকায় দেশের শহর থেকে গ্রাম সব জায়গায় বাজতে থাকে বিয়ের সানাই। তবে শুধু আবহাওয়া নয়, আরও নানা বাস্তব কারণেই শীতকাল বিয়ের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন সবাই।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কেন শীতকালেই বেশি বিয়ে হয়-
লম্বা ছুটি ও আত্মীয়-সমাগম
ডিসেম্বরে স্কুল-কলেজের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে শুরু হয় ছুটি। কর্মজীবীরাও এ সময়ে কিছুটা অবসর পান। ফলে দেশ-বিদেশে থাকা আত্মীয়-পরিজন একত্রিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়, যা অন্য সময়ের তুলনায় সহজ নয়।
কাজে ক্লান্তিহীন অংশগ্রহণ
বিয়ের আয়োজন মানেই শত ব্যস্ততা দাওয়াত, রান্না, সাজসজ্জা, অতিথি আপ্যায়ন ইত্যাদি। গরমে এসব কাজে ক্লান্তি আসে দ্রুত, কিন্তু শীতকালে স্বস্তিদায়ক আবহাওয়ার কারণে সবাই প্রাণবন্তভাবে অংশ নিতে পারেন।
মেকআপে আরাম ও দীর্ঘস্থায়িত্ব
গরমে ঘাম বা আর্দ্রতার কারণে মেকআপ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শীতকালে এই ঝুঁকি নেই। বর-কনে ও অতিথিরা সহজে সাজগোজে আরাম পান, আর মেকআপও টিকে থাকে দীর্ঘ সময়।
ভারী খাবারে বাড়তি রুচি
পোলাও, বিরিয়ানি, রোস্ট বা রেজালার মতো ভারী খাবার শীতকালে আরও সুস্বাদু লাগে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় খাবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও থাকে না। সঙ্গে পিঠা-পুলির আয়োজন যোগ হয়ে বিয়ের ভোজকে করে তোলে আরও মুখরোচক।
ফুলসজ্জায় সহজলভ্যতা
শীতকালে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, অর্কিডসহ নানা ফুল সহজলভ্য হয় এবং দামও তুলনামূলকভাবে কম। এতে বিয়ের মঞ্চ ও ঘরবাড়ি সাজানো হয় আরও রঙিনভাবে।
ফলের ঝামেলা কম
এই সময়ে মৌসুমি ফলের প্রাচুর্য না থাকায় ফলের প্লেট সাজাতে বাড়তি খরচ বা ঝক্কি থাকে না। ফলে আয়োজন হয় সহজ ও খরচও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
সময় ও খরচ সাশ্রয়
শীতকালে দিনের সময় ছোট হওয়ায় অনুষ্ঠান সাধারণত দিনের মধ্যেই শেষ হয়। এতে সময় বাঁচে এবং বিদ্যুৎ ও শ্রম খরচও কমে যায়।
বিদ্যুৎ বিলে সাশ্রয়
ফ্যান বা কুলারের প্রয়োজন না থাকায় বিদ্যুৎ খরচ কমে। রাতের অনুষ্ঠান শেষে সবাই দ্রুত বিশ্রামে যান, ফলে বিলও তুলনামূলকভাবে কম আসে।
মশামুক্ত নিশ্চিন্ত রাত
শীতকালে মশা কম থাকায় মশারি বা স্প্রে ব্যবহারের ঝামেলা নেই। অতিথি ও নবদম্পতিরা নিশ্চিন্তে রাত কাটাতে পারেন।
জম্পেশ হানিমুন
শীতকাল ঘোরাঘুরির আদর্শ সময়। এই মৌসুমে দেশি-বিদেশি পর্যটনকেন্দ্রে আকর্ষণীয় কাপল প্যাকেজও পাওয়া যায়, যা নবদম্পতিদের জন্য বাড়তি আনন্দ যোগ করে।
সব মিলিয়ে, আবহাওয়ার স্বস্তি, লজিস্টিক সুবিধা, সাজসজ্জার সহজলভ্যতা ও রোমাঞ্চ সব দিক থেকেই শীতকাল বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিয়ের মৌসুম হয়ে উঠেছে।
যেভাবে সামলাবেন অফিসের টক্সিক কলিগকে
শীতের আগে নিজের যত্নে করণীয়
ডোপামিন ডিটক্সের উপকারিতা