ঢাকা
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

জুলাই-আগস্টে আহতদের ৪৯৩ জন এক চোখ হারিয়েছেন: চিকিৎসকের সাক্ষ্য

আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১০ পিএম

২০২৪ সালের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়া ৪৯৩ জন রোগী চিরতরে এক চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন এবং ১১ জন দুই চোখেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন-এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নিলা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিনি সাক্ষ্য দেন।

সাক্ষ্যে ডা. জাকিয়া বলেন, ‘২০২৪ সালের ১৭ জুলাই থেকে আমাদের হাসপাতালে আন্দোলনে আহত রোগীরা আসতে শুরু করে। প্রথম দিনই মেটালিক পিলেট ও বুলেটবিদ্ধ পাঁচজন রোগী ভর্তি হন।’

তিনি জানান, ‘১৮ জুলাই ছিল রক্তস্নাত একটি দিন। সেদিন হাসপাতালে প্রায় ১০০ জন রোগী ভর্তি হন এবং আরও শতাধিককে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমি দুপুরে ইমার্জেন্সির সামনে দাঁড়িয়ে এক ভয়াবহ চিত্র দেখি-১৪ থেকে ২৫ বছর বয়সী শতাধিক রোগী, অনেকেই চোখে রক্তাক্ত অবস্থায়, কেউ এক চোখ ধরে, কেউ দুই চোখে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে কাঁপছেন।

ডা. জাকিয়া জানান, ১৮ জুলাই ১০টি অপারেশন টেবিলে রাত ৯টা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার চলেছে। ১৯ জুলাইও একই অবস্থা ছিল। আহতদের মধ্যে অধিকাংশের চোখে ছিল মেটালিক পিলেট, কেউ কেউ বুলেটবিদ্ধ ছিলেন। কারও কর্ণিয়া ছিদ্র, কারও চোখের সাদা অংশ ছিদ্র, কেউ কেউ ফেটে যাওয়া চোখ নিয়ে এসেছেন।

তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের ৪, ৫ ও ৬ আগস্ট সবচেয়ে বেশি রোগী রিসিভ করি। সব মিলিয়ে আমাদের হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে এক চোখে চিরতরে দৃষ্টি হারিয়েছেন ৪৯৩ জন, দুই চোখে দৃষ্টি হারিয়েছেন ১১ জন। এছাড়া দুই চোখে গুরুতর দৃষ্টি স্বল্পতায় আছেন ২৮ জন এবং এক চোখে গুরুতর দৃষ্টি স্বল্পতায় আছেন ৪৭ জন।’

চিকিৎসক জানান, ‘নিজেদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অনেক রোগী হাসপাতালে আসার সময় তাদের ডাক নাম, ভুল মোবাইল নম্বর ও সঠিক জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর না দিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।’

এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম। এ সময় অন্য প্রসিকিউটররাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে মামলার পলাতক আসামি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন জেরা করেন।

এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ।

NB/FJ
আরও পড়ুন
সর্বশেষপঠিত