ঢাকা
সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

স্কিনকেয়ারের পরও কেন কমছে না ব্রণ 

আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৮ এএম

পিম্পল বা ব্রণ ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, অনেক সময় নিয়মিত স্কিনকেয়ার রুটিন অনুসরণ করেও এর থেকে মুক্তি মেলে না। উল্টো এটি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। স্কিনকেয়ার করার পরও ব্রণ না কমার পেছনে মূল কারণ কী এবং এ ক্ষেত্রে কী করণীয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

ব্রণ বা একনে কেন হয়, তা বুঝতে পারলেই এর সমাধান সহজ হয়। সাধারণত টিনেজ থেকে শুরু করে অ্যাডাল্ট বয়সেও এই সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়।

ব্রণ না কমার প্রধান কারণ: হরমোন ও জীবনযাত্রার ধরন

স্কিনকেয়ারের পরও ব্রণ না কমার পেছনে দুটি প্রধান কারণ রয়েছে-

১. হরমোনের প্রভাব

  • টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি: টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাবে সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড (তেল গ্রন্থি) থেকে সেবাম বা তেলের নিঃসরণ বেড়ে যায়। সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড অতিরিক্ত সক্রিয় হলে পোরস সাইজ বড় হয়ে যায়। এই অতিরিক্ত সেবাম যদি কোনো কারণে পোরসের ভেতরে আটকে যায় এবং বাইরে বের হতে না পারে, তবে তা ইনফ্ল্যামেটেড ও ইনফেক্টেড হয়ে একনে তৈরি করে।
  • হরমোনাল ইমব্যালেন্স: টেস্টোস্টেরন হরমোন নারী-পুরুষ সবার শরীরে থাকলেও, নারীদের হরমোনাল ইমব্যালেন্স থাকলে এর নিঃসরণ বেশি হয়। তাই PCOS (পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম) থাকলে ত্বকে বেশি ব্রণ দেখা যায়।
  • স্ট্রেস হরমোন: কর্টিসল বা স্ট্রেস হরমোনের প্রভাবেও সেবাম সিক্রেশন বৃদ্ধি পেতে পারে।

২. জীবনযাত্রার ধরন

  • খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট, সুগারি ফুড আইটেম, তেলে ভাজা খাবার খাওয়া ব্রণের জন্য দায়ী হতে পারে।
  • হাইজিন ও ঘুম: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা, ঠিকমতো না ঘুমানো এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা (হাইজিন) বজায় না রাখাও ব্রণের কারণ হতে পারে।
  • ফুড হ্যাবিট ও জেনেটিক্যাল কারণ: অনেকের ক্ষেত্রে ফুড হ্যাবিট এবং জেনেটিক্যাল কারণেও অ্যাডাল্ট একনে হতে পারে।

স্কিনকেয়ার করার পরও ব্রণ কমছে না? করণীয় কী

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্কিনকেয়ার করার পর ব্রণ একদম সাথে সাথে চলে যাবে এমন ধারণা ভুল। ব্রণ প্রতিরোধ করতে সঠিক প্রোডাক্টের পাশাপাশি জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা অপরিহার্য।

  • পরিচ্ছন্নতায় জোর দিন: ঘুমানোর সময় ব্যবহৃত বালিশের কভার, মেকআপ ব্রাশ, হাতের নখ, মোবাইল কভার এবং তোয়ালে অবশ্যই নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে।
  • পোরস ডিপ ক্লিন: পোরস যেন গভীরভাবে পরিষ্কার থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • সপ্তাহে ১/২ দিন স্যালিসাইলিক অ্যাসিড (Salicylic Acid) ব্যবহার করলে পিম্পলস কমতে সাহায্য করে।
  • সপ্তাহে ১/২ দিন ক্লে বেইজড মাস্ক ব্যবহার করলে ফেইসের অতিরিক্ত অয়েলিনেস কমে আসে।
  • মিনিমাল রুটিন: স্কিনকেয়ার রুটিন একদম সিম্পল বা মিনিমাল রাখুন। লাইট ময়েশ্চারাইজার ও অয়েল ফ্রি সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার সাথে স্কিনকেয়ার রুটিন মিনিমাল রেখে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে পারলেই পিম্পল-মুক্ত ত্বক পাওয়া সম্ভব।

ব্রণের বেশ কিছু ধরন আছে, যেমন: Blackheads, Whiteheads, Papule, Pustule। সাধারণত টিনেজ একনে আপনাআপনি ঠিক হয়ে যায়।

তবে যদি সিস্টিক একনে, ফাঙ্গাল একনে অথবা দীর্ঘদিন ধরে ব্রণের সমস্যা থাকে এবং কোনোভাবে তা না কমে, তাহলে দেরি না করে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন যে, স্কিনকেয়ার করার পরও ব্রণ না কমলে সবার আগে জীবনযাত্রার ধরন ও হরমোন লেভেল ঠিক আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

NB
আরও পড়ুন