সামনে কোনো পরীক্ষা এলেই আমাদের অনেকেই ভীষণ রকমের ভয়ে, উদ্বেগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। কেবল সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝেই নয়, সিরিয়াস পড়ুয়াদের মাঝেও পরীক্ষা নিয়ে ভয়ভীতি কাজ করে। পরীক্ষা নিয়ে এ ধরণের ভীতি বা উদ্বেগকে বলা হয় ‘এক্সাম অ্যাংজাইটি’। আমাদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার নিয়ম অনুযায়ী সাধারণত বছরে একাধিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। আর এ সময় সন্তানের পাশাপাশি মা-বাবাও বাড়তি টেনশনে ভোগেন। কিছু কৌশল মেনে চললে সহজেই সন্তানের মন থেকে পরীক্ষাভীতি দূর করতে পারবেন। জেনে নিন, কী আছে এই কৌশলে?
* শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা পরীক্ষা এলেই ঘুম, খাওয়া বাদ দিয়ে পড়ার অতিরিক্ত চাপ নিয়ে অস্থিরতায় পড়ে যায়। এই চাপ শুধু মানসিক নয় শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে। ‘প্রতিযোগীদের মাঝে তুলনা’ এবং ‘ভালো ফলাফল করতেই হবে’- মা বাবার এরকম চাওয়াও তাদের চাপের কারণ হয়ে থাকে। মনে রাখবেন পরীক্ষা, পরীক্ষা করে সন্তানের মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবেন না। পরীক্ষা এলে সন্তান যেন বাড়তি চিন্তায় না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন। অন্যদিনের মতো প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করুন। রাত জেগে পড়ার অভ্যাস ত্যাগ করে ভোরে উঠে পড়তে বসার অভ্যাস করান।
* পরীক্ষার আগে কী পড়বো- এ নিয়ে অনেকে শঙ্কিত থাকে। অভিভাবক হিসেবে সন্তানকে বলুন, পরীক্ষার আগে নতুন কিছু পড়ার আগে পড়া জিনিসগুলো বারবার পড়া প্রয়োজন। সময় থাকলে কম পড়া অধ্যায়গুলোতে একটু-আধটু চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। যে বিষয়ে আপনার সন্তান একটু দুর্বল, তা বারবার পড়ান। পড়া শেষে শোবার সময় তা মনে মনে যেন পড়ে সেটা শিখিয়ে দিন। সংকোচ না করে প্রয়োজনে ওর কোনো সহপাঠীর সাহায্য নিন। শিক্ষক এবং অন্যান্য অভিভাবকদের সঙ্গে শেয়ার করে সন্তানের পড়ার বিষয়গুলো ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা জেনে নিন।

* মন থেকে নেতিবাচক ভাবনা দূর করতে সাহায্য করুন। নেতিবাচক ভাবনা পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে বাধা দেয়। সন্তান যদি পড়াশোনায় দুর্বল হয় বা যদি পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো নাও থাকে, তারপরও তার মধ্যে ইতিবাচক ধারণা রাখতে সাহায্য করুন। আত্মবিশ্বাসের জোরে ভীতি কাটিয়ে উঠে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। অতীতে কম পড়েছে বা কিছু পড়া বাকি রয়েছে- এমনটা হলে অতিরিক্ত চাপ না নিয়ে যতটুকু সময় আছে তার মধ্যে বুঝে পড়ার অভ্যাস করাতে হবে।
* পরীক্ষার জন্য অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের খেলাধুলা বন্ধ করে দেন। এতে ভয়টা আরও বাড়ে। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে তাদের জন্য অবসর সময় বের করুন। এতে তাদের মনোযোগ আরও বাড়বে। আপনার সন্তান পরীক্ষা নিয়ে ভয় পেয়ে থাকলে তাদেরকে বুঝিয়ে বলুন। আবার কোনো একটি পরীক্ষা মনমত না হলে বাকিগুলো যেন ভালো হয়, সে ব্যাপারে উৎসাহ দিন।
* পরীক্ষার আগে সন্তানের খাবারের দিকে যথেষ্ট নজর রাখুন। সুষম খাবারের পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় ডিম, দুধ রাখুন। এতে তারা পরিশ্রম করলেও সহজে ক্লান্ত হবে না। সময়মতো ঘুমানোর অভ্যাসটাও ঠিক রাখতে হবে।
