কোমলমতি শিশু বা ছোট সন্তানদের মধ্যে বিভিন্ন আচরণগত সমস্যা দেখা যায়। এদিক-ওদিক অনবরত মাথা ঘোরানো, শরীর নাচানো, বৃদ্ধাঙুল চোষা, নখ খুঁটানো, দাঁতে দাঁত ঘষা এই ধরনের অনেক অভ্যাসজনিত সমস্যা শিশুর মধ্যে দেখা যায়।
সব থেকে বদভ্যাস হচ্ছে মুখে আঙুল দিয়ে চোষা, এ কারণে কোনো কোনো অভিভাবক বিষয়টি উদ্বেগ হিসেবে দেখেন।
এদিকে শিশুদের মুখে আঙুল দেয়াকে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, এটি শিশুকে নিরাপদ ও শান্ত বোধ করায়। কিন্তু অল্প বয়স পর্যন্ত এই অভ্যাস ঠিক আছে। যদি তা চার-পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে থাকে, তাহলে উদ্বেগের। এতে শিশুর দাঁতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুরুগ্রামের আর্টেমিসের ড্যাফোডিলসের প্রধান শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. রাজীব ছাবড়া শিশুদের এই বদভ্যাস দূর করার ব্যাপারে জানিয়েছেন। এবার তাহলে এ বিষয়ে জেনে নেয়া যাক।

আঙুল চোষার অভ্যাস দূর করার উপায়
শিশুর যেকোনো অভ্যাস পরিবর্তন করার জন্য বা পরিত্রাণে ধৈর্য ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। ছোট ছোট কোনো কাজের জন্য তাকে তিরস্কার বা শাস্তি দেয়া সমাধান বা বিকল্প হতে পারে না। তিরস্কারের জন্য প্রায়ই শিশুর অভ্যাস খারাপ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ জন্য ধৈর্য ও শান্তভাবে শিশুকে বোঝাতে হবে।
এটা সবারই জানা যে, শিশুরা তাদের ভালো বোধ করার জন্যই আঙুল চুষে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের জড়িয়ে ধরা এবং প্ররোচিত করা ভালো বিকল্প হতে পারে। যা তাদের এই খারাপ অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করবে। আবার বাজারে কিছু খেলনা বা প্যাসিফায়ার পাওয়া যায়, যা শিশুরা দাঁত দিয়ে চেপে চুষতে পারে। এসব শিশুর আঙুল চোষার মতো খারাপ অভ্যাস থেকে মুক্তির কার্যকর উপায় হতে পারে।
সন্তানের প্রতি মনোযোগ দিলে দেখতে পাবেন, তারা খেলাধুলা কিংবা কোনো কাজের সময় আঙুল চুষে না। এ জন্য যতটা সম্ভব তাদের খেলাধুলা বা কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত রাখুন। সন্তানরা রং নিয়ে খেলতে বেশি পছন্দ করে। তাদের কাগজ ও রঙিন স্কেচ কলম দিয়ে ব্যস্ত রাখতে পারেন।
সন্তানদের তিরস্কারের পরিবর্তে উৎসাহ ও পুরষ্কারের পথ সহজ করে দিন। সন্তান যদি আপনার নির্দেশ অনুযায়ী আঙুল না চোষে, তাহলে তাকে পুরস্কার দিন। চাইলে এর বিনিময়ে তার পছন্দের খাবার রান্না করে বা পছন্দের খেলনা দিতেও পারেন। এছাড়া আঙুল চোষার কারণে সন্তানের দাঁতের উপর বিরূপ প্রভাব পড়া শুরু করে। এ জন্য দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী চিকিৎসক পরামর্শ প্রদান করবেন।
