ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বন্দি ফ্লোটিলা কর্মীদের খাবার না দেওয়ার অভিযোগ

আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৫ পিএম

ফিলিস্তিনের গাজায় ত্রাণবাহী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার শত শত কর্মী ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি রয়েছেন। আটকদের মধ্যে সুইডেনের জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ ৪৭০ জন ছিলেন। কারাগারে না খাইয়ে রাখার অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ।   

গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) তাদের সমুদ্র থেকে আটক করে প্রথমে আশদোদ বন্দরে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ইসরায়েলের কারাগারে রাখা হয়। এর মধ্যে ইতালির চার নাগরিককে তাদের নিজ দেশে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। অন্য বিভিন্ন দেশের কর্মীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।  

ইসরায়েলের নৌবাহিনী ফ্লোটিলার ৪২টি জাহাজের সব কটিকে অবৈধভাবে আটক করে। নৌযানগুলো গাজার বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সহায়তা, স্বেচ্ছাসেবক ও ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভাঙতে রওনা হয়েছিল।

এদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, ফ্লোটিলা থেকে আটক ১৩৭ কর্মীকে তুরস্কে পাঠানো হয়েছে।

দখলদার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি বাহিনী আটক করার পর তাদের ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সংবাদমাধ্যম হারেৎজ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আটক কর্মীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, জর্ডান, কুয়েত, লিবিয়া, আলজেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, মরক্কো, সুইজারল্যান্ড, তিউনিসিয়া এবং তুরস্কের নাগরিক রয়েছেন।

ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিদের জন্য আইনি কেন্দ্র আদালাহ জানিয়েছে, আটক কর্মীদের সঙ্গে কেটজিওট কারাগারে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের ইসরায়েলের দক্ষিণ নেগেভ মরুভূমি অঞ্চলে রাখা হচ্ছে। আদালাহ আটকদের সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেটে বলেছে, কেউ কেউ বলেছেন আটকের পর থেকে তারা কোনো খাবার পাননি। তাদের ওষুধ আটকে রাখা হচ্ছে। কোনো বিকল্প ওষুধও সরবরাহ করা হয়নি। অন্যরা পরিষ্কার খাবার পানির অভাবের কথা জানিয়েছেন। যে পানি দেওয়া হচ্ছে তা অনিরাপদ বা নিম্নমানের।

এদিকে ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গাজা ফ্লোটিলা থেকে আটক চার কর্মীকে নির্বাসনের আহ্বান জানিয়েছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি শুরু থেকেই ফ্লোটিলার উদ্যোগকে সমালোচনা করে আসছিলেন। এক বক্তব্যে নৌবহরের সমালোচনা করতে দেখা যায় তাঁকে। তিনি ফ্লোটিলাকে একটি ‘বিপজ্জনক, দায়িত্বজ্ঞানহীন’ উদ্যোগ বলে অভিহিত করেছিলেন। তিনি বলেন, এই উদ্যোগ ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য কোনো উপকারে আসবে না।

শুক্রবার ওই চার নাগরিক আটক হওয়ার পর ইতালির কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের দ্রুত নির্বাসন করা হোক। ইতালির চারজনই মূলত দেশটির সংসদ সদস্য। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার জানায়, ইসরায়েলে অবস্থিত দূতাবাসের কর্মকর্তারা আটক চারজনের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা ক্লান্ত হলেও সুস্থ আছেন। কনস্যুলার টিম জানিয়েছে, তাদের অস্বস্তিকর পরিবেশে কারাগারে রাখা হয়েছে।

ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি কারাগারে তাদের ভালো পরিবেশে রাখার জন্য ইসরায়েলকে বলেছেন। তিনি জানান, আমরা নির্বাসন প্রক্রিয়া দ্রুত করার জন্য কাজ করছি। ইসরায়েলের প্রস্তাবিত নির্বাসন আদেশে যারা দ্রুত স্বাক্ষর করবে, তাদেরই আগে ফেরত পাঠানো হবে।

ফ্লোটিলা আটকের পর বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ দেখা দেয়। ইতালিতেও মেলোনি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে হাজার হাজার মানুষ।

খাবার না দেওয়ার অভিযোগ পর্তুগিজ কর্মীর

ফ্লোটিলা থেকে আটকদের না খাইয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। পর্তুগিজ কর্মী মারিয়ানা মোর্তাগুয়া তার পরিবারকে পাঠানো বার্তায় জানিয়েছেন, তাকে ৪৮ ঘণ্টা ধরে খাবার ছাড়াই আটকে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, ইসরায়েলে নিযুক্ত পর্তুগিজ কনসাল চার নাগরিক আটক থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন। কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তবে আটকের পর কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও তারা সুস্থ আছেন।

নৌবহরে অংশ নেওয়া তিন পোলিশ নাগরিককে ইসরায়েল ছেড়ে পোল্যান্ডে ফিরে যাওয়ার জন্য দ্রুত প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে তারা ইসরায়েল থেকে স্বেচ্ছায় বহিষ্কারের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।

MH
আরও পড়ুন