ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনের জিম্মি সময় যেভাবে কাটল

আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৯ পিএম

বান্দরবানে সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধারের আদ্যোপান্ত জানিয়েছে র‍্যাব। একইসঙ্গে ম্যানেজারের কাছ থেকে নানান তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) পার্বত্য জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, রুমায় সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণের পর কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) অস্ত্রধারীরা ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ছয়বার স্থান বদল করেছিল। কোথাও পাহাড়ি পথে, কোনো সময় ঝিরির পথ ধরে ও মোটরসাইকেলেও সশস্ত্র পাহারার মধ্যে তাঁকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নেওয়া হয়। খেতে দেওয়া হয় কলারপাতা মোড়ানো গরম ভাত, ডাল ও ডিম ভাজি। তবে তাঁকে মারধর করা হয়নি।

কেএনএফের জিম্মিদশা থেকে ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর মুক্তি পান নেজাম উদ্দিন। এরপর তিনি র‌্যাবের কাছে তাঁর বন্দী অবস্থার এমন বিবরণ দিয়েছেন। 

এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কেএনএফের শতাধিক অস্ত্রধারী সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখায় অতর্কিতে হামলা চালায়। তাঁরা ব্যাংকের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্য এবং অন্যান্য লোকজনকে জিম্মি করে। তাঁরা পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে দুটি সাব মেশিন গানসহ (এসএমজি) ১৪টি অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুটের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে।

সংবাদ সম্মেলনে বকমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অস্ত্রের মুখে ধরে নেওয়ার পর সন্ত্রাসীরা নেজাম উদ্দিনকে চোখ বেঁধে বেথেলপাড়ার পাশ দিয়ে ঝিরির পথে নিয়ে যায়। কিছু দূর নিয়ে চোখ খুলে দিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা হেঁটে এক নির্জন জঙ্গলে নিয়ে তাঁকে ঘুমাতে দেওয়া হয়। পরদিন বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় প্রাতরাশ করতে দিয়ে প্রথমে পাহাড়ি ঝিরি ধরে এবং পাহাড় অতিক্রম করে আরেকটি ঝিরিতে নেওয়া হয়। গভীর খাদে ওই ঝিরিতে ৩০-৩৫ জন অস্ত্রধারীর সামনে তাঁকে কলাপাতায় মোড়ানো গরম ভাত, ডাল ও ডিমভাজি খাওয়ানো হয়। খাওয়া শেষে আবার হাঁটা শুরু হয়। আরেকটি জায়গায় নিয়ে বিশ্রাম করার জন্য ১৫ থেকে ২০ মিনিটি সময় দেয়। সেখান থেকে বুধবার রাত ৮টার দিকে তাঁকে টংঘরে (মাচাং ঘর) নিয়ে নুডলস খেতে দিলে তিনি খাননি। ওই টংঘরে পাঁচজন অস্ত্রধারীর সঙ্গে রাতে তাঁকে ঘুমাতে দেওয়া হয়। পরদিন সেখান থেকে এক ঘণ্টা পায়ে হেঁটে আরেক জায়গায় নিয়ে রাখা হয়। এক ঘণ্টা বিশ্রামের পর মোটরসাইকেলে করে আরেকটি নতুন জায়গায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে উদ্ধার করে র‌্যাব।

 

 

 

AS
আরও পড়ুন