ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

মাশরাফি বিন মর্তুজার কলাম

ডি মারিয়া ছাড়া নিষ্প্রাণ মনে হয় মেসিকে

আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩৪ পিএম

আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের সমর্থক মাশরাফি বিন মুর্তজা। যতই কাজ থাকুন, আর্জেন্টিনার খেলা সাধারণত মিস করেন না। এবারের কোপা আমেরিকার খেলাও দেখেছেন ভোরবেলা। কোনো খেলা মিস হলে পরে হাইলাইটস দেখেছেন। সোমবার সকালের ফাইনাল আনহেল ডি মারিয়ার শেষ আর্ন্তজাতিক ম্যাচ হতে যাচ্ছে। আর্জেন্টিনার এই তারকাও মাশরাফির অন্যতম পছন্দের খেলোয়াড়। ডি মারিয়ার বিদায়ী মুহূর্তে মাশরাফি তাকে নিয়ে নিজের ফেসবুকে জানিয়েছেন আবেগ ও ভালোবাসার কথা।

আনহেল ডি মারিয়া তার শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে, স্বাভাবিকভাবে আর্জেন্টিনা দল চাইবে ট্রফি জিতে তাকে দারুন একটা বিদায় দিতে। আনহেল কি করেছে আর্জেন্টিনার জন্য, তা চিন্তা করলে মনে হয় শুধু মেসির কারণে সে সবসময় চোখের আড়ালে থেকে গেছে। বেশি দূরে যেতে হবে না, ২০১৪ বিশ্বকাপে তার ইনজুরির দিকে তাকালেই বোঝা যায়। এমন কি মেসিও ফাইনালে কিছুই করতে পারেনি, কারণ ডি মারিয়া মাঠে না থাকলে ডিফেন্ডারদের মেসিকে মার্ক করা কিছুটা সহজ হয়ে যায়। সেদিন ফাইনালে লাভেজ্জি তাও বেশ ভালো খেলছিলো যে কারনে বেশ কিছু সুযোগ আর্জেন্টিনা তৈরিও করেছিলো, এমন কি লাভেজ্জির একটা ক্রস থেকে হিগুয়েন গোল করলেও তা অফসাইড হয়। 

হাফটাইমের পর কোচ আলেহান্দ্রো সাবেয়া লাভেজ্জিকে উঠিয়ে আগুয়েরোকে মাঠে নামালো স্রেফ বড় নামের কারণে। ব্যাস আর্জেন্টিনার আক্রমন শেষ হয়ে গেল। অথচ ডি মারিয়া থাকলে বিষয়টা পুরো ভিন্ন হতে পারতো। কোপার ফাইনালে ব্রাজিলকে গোল করা বা বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সকে গোল করা এগুলো বলাই যায়। তবে ডি মারিয়া ছাড়া মেসি বা আর্জেন্টিনা কতোটা দূর্বল তা বোঝার জন্য শেষ বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখলেই বোঝা যায়। ৭০ মিনিটের পর ডি মারিয়াকে উঠিয়ে নিলো স্কলানি, ব্যাস ফ্রান্স একের পর এক আক্রমন শুরু করলো এবং দুই গোলই শোধ করে ফেললো।

অথচ ডি মারিয়া মাঠে থাকতে ফ্রান্স মেসি এবং ডি মারিয়া দুজনকেই মার্কে রাখতে হচ্ছিলো, যার কারনে তারা অলআউট চাইলেও খেলতে পারছিলোনা। আর্জেন্টিনা এই বিশ্বকাপে নক আউটে অলমোস্ট সব ম্যাচেই গোল খেয়েছে ডি মারিয়া মাঠ ছাড়ার পর। এমনকি ১০১৮ বিশ্বকাপে এই ফ্রান্সের কাছেই ৪-৩ গোলে হেরেছিলো,কিন্তু প্রথম গোল পেনাল্টিতে গ্রিজম্যান যখন দেয় ঠিক তার কিছুক্ষন পর ডি মারিয়া ডি বক্সের বাহিরে থেকে দারুন এক রেইনবো কিকে সমতায় ফিরেয়েছিলো। 

আর্জেন্টিনাকে এরকম অনেক অনেক দারুণ সব স্মৃতি সে মাঠে ছেড়ে যাচ্ছে,শুধু তাইনা মেসির পিক টাইমেই, ডি মারিয়া ছাড়া মেসিকে অনেক ম্যাচ নিস্প্রাণ মনে হয়েছে, আর মেসির শেষ সময়ে যখন মেসি তার সেই গতি হারিয়েছে তখন ডি মারিয়া ছাড়া কি করবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে একটা বিষয় অবশ্যই বলা উচিত যে এই দলটা অনেকটাই মেসি নির্ভরতা কাটিয়ে উঠেছে, প্রায় ম্যাচেই অন্যরা গোল করছে এবং ভালোও খেলছে, স্কালোনির সবচেয়ে বড় আবিস্কার সম্ভবতো এটাই।

আনহেল ডি মারিয়া আপনাকে কুর্নিশ, একজন অন্ধ আর্জেন্টাইন ফুটবলের সমর্থক হিসাবে। আপনি অবশ্যই গুরু ডিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনার যোগ্য উত্তরসূরি। আপনাকে ভোলা প্রায় অসম্ভব।

আরও পড়ুন